পড়া মনে রাখার বেস্ট ১৩ টি উপায়
পড়া মনে রাখার বেস্ট উপায় হলো বার বার রিভিশন করা। গভীরভাবে বুঝে পড়া। খবরের কাগজের মতো মন গড়া পড়ে গেলে কখনই পড়া মনে থাকবে না। নিরিবিলি পরিবেশে বুঝে বুঝে পড়তে হবে এবং কিছুদিন পরপর রিভিশন দিতে হবে তাহলে পড়া অবশ্যই মনে থাকবে।
তো চলুন দেখে নেওয়া যাক পড়া মনে রাখার ১৩ টি বেস্ট কৌশল
- মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে
- বুঝে পড়তে হবে
- মার্কার প্যান ব্যবহার করা
- বারবার রিভিশন দিতে হবে
- নিরিবিলি পরিবেশ
- পড়াশোনার মাঝে বিরতি
- সংক্ষিপ্ত করে পড়া
- খাতায় লিখতে হবে
- খেলাধুলা ও বিনোদন
- রেগুলার ক্লাস করতে হবে
- বাস্তব জীবনে প্রয়োগ অথবা নাটকীয় ভঙ্গিতে পড়তে হবে
- রাতে শোবার আগে পড়াশোনার বিষয় বস্তু ভাবতে হবে
- পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম
১. মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে
পড়াশোনা মনে রাখার সর্বপ্রথম ধাপ মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করা। আপনি যদি পড়াশোনায় মনোযোগী না হন, যেমন এক লাইন পড়তেছেন 5 মিনিট অন্যদিকে তাকিয়ে অন্য কিছু ভাবতে ভাবতে সময় নষ্ট করছেন তাহলে আপনার সেই পড়াগুলো মনে রাখা বেশ কষ্টকর হয়ে যাবে। তাই যা পড়বেন মনোযোগ সহকারে গভীর ভাবে পড়বেন। চেষ্টা করবেন সবসময় পড়াশোনার দিকে ফোকাস রাখতে।
২. বুঝে বুঝে পড়তে হবে
পড়াশোনা মনে রাখার দ্বিতীয় ধাপটি হল বুঝে শুনে পড়তে হবে। আপনি যদি না বুঝে অনর্গল পড়তে থাকেন সেই পড়া কখনো আপনার মনে থাকবেনা। যদিও মনে থাকে সেটি সামরিক, দীর্ঘদিন মনে রাখতে পারবেন না। তাই চেষ্টা করবেন প্রত্যেকটি পড়া সময় নিয়ে বুঝে বুঝে পড়তে। তাহলে সেই পড়াটি আপনার দীর্ঘ দিন মনে থাকবে।
৩. মার্কার প্যান ব্যবহার করা
মার্কার পেন পড়াশোনা মনে রাখায় ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। মনে করুন, একটি গরুর পাল এ অনেকগুলো সাদা রঙের গরু রয়েছে। এবং সেখান থেকে একটি গরু আপনার। এখন কথা হচ্ছে আপনার গরু আপনাকে খুঁজে পেতে অনেক কষ্ট হবে কারণ সেখানে একই রঙের অনেকগুলো গরু রয়েছে। এখন মনে করুন তার মধ্যে একটি গরুর রং লাল এবং লাল রঙের গরুটি আপনার এখন লাল রঙের গরুটি খুঁজে পেতে আপনার অনেক সুবিধা হবে।
ঠিক তেমনি আপনার পড়াশোনার ক্ষেত্রে আপনার মেইন জিনিস কি সেই জিনিসটি হাইলাইট করতে হবে একটি মার্কার পেন ব্যবহার করে। কারণ হাইলাইট সব সময় আমাদের চোখে পড়ে। সুতরাং পড়াশোনা মনে রাখায় মার্কার পেন ও ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
৪. বারবার রিভিশন দিতে হবে
পড়া মনে রাখার ক্ষেত্রে রিভিশন এর কোন বিকল্প নেই। আপনি পড়া ১০ ঘন্টা সময় নিয়ে পড়ুন কিন্তু যদি আপনি তা পরবর্তীতে ডিভিশন না দেন কোন লাভ হবে না। আপনি পড়াটি ভুলে যাবেন। চলুন আপনাকে একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দিই-
মনে করুন, আপনার বাড়ির পাশে আপনার সাথে আমার ১ দিন দেখা হলো, আপনি আমাকে একবারে নোটিশ করলেন না। পরের দিন আবার দেখা হলো আপনি একটু নোটিশ করলেন। এবং ১৫ দিন পর যদি আপনার সাথে আমার আবার দেখা হয় তাহলে আপনি অবশ্যই আমাকে মনে রাখতে পারবেন। পড়াশোনার বিষয়টি ও এরকম। বারবার রিভিশন দিলে কখনোই ভুলে যাবেন না আপনার ব্রেইন তা অটোমেটিক ধরে রাখবে।
৫. নিরিবিলি পরিবেশ
দীর্ঘদিন এবং দ্রুত পড়া মনে রাখার জন্য নিরিবিলি পরিবেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি একটি হইচই ও কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে পড়াশোনা করেন তো আপনার পড়া মুখস্ত করতে যেমন অনেক কষ্টকর তেমনি দীর্ঘদিন ধরে রাখা ও সম্ভব না। কারণ আপনি ব্রেইনকে যখন পড়া মনে রাখতে বলছেন ঠিক তখনই হৈচৈ পূর্ণ আলাদা আওয়াজ আপনার ব্রেইন কে কনফিউজ করে। যার ফলে আপনার ব্রেইন তার মেইন জিনিসকে মনে রাখতে পারে না।
তাই পড়াশুনা দীর্ঘদিন মনে রাখতে নয়েজ মুক্ত নিরিবিলি পরিবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৬. পড়াশোনার মাঝে বিরতি
পড়াশোনার মাঝে হালকা বিরতি না নিলে পড়াশোনা একঘেয়েমি লাগে। যার ফলে পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়া অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। তাই পড়াশোনার মাঝে হালকা বিরতি নিতে পারেন। এতে করে একঘেয়েমি দূর হয়ে যাবে। এবং পড়াশোনায় মন বসবে। তাই পড়াশোনা মনে রাখার জন্য পড়াশোনার মাঝে হালকা বিরতি রাখা প্রয়োজন।
৭. সংক্ষিপ্ত করে পড়া
হিউম্যান ব্রেইন সবসময় সংক্ষিপ্ততা পছন্দ করে এবং শর্টকাট খুঁজে। আপনি যখন কোন একটি বিষয় পড়তে যাবেন সব সময় তার মেইন বিষয় বস্তুর প্রতি ফোকাস করবেন। তারপর ডিটেইলস পড়তে যাবেন। এতে করে আপনার পড়া সহজেই মনে থাকবে।
পরীক্ষার সময় আপনি ডিটেইলস ভুলে গেলেও মেইন বিষয়বস্তু সংক্ষিপ্ত আকারে মনে থাকলে বানিয়ে বানিয়ে কিছু লিখতে পারবেন।
৮. খাতায় লিখতে হবে
আপনি যা পড়লেন তার বিষয়বস্তু সবসময় খাতায় লেখার চেষ্টা করবেন। এতে করে আপনার পড়া দীর্ঘদিন মনে থাকবে। আপনি যদি যা পড়বেন তার ডিটেলস লিখতে চান তাহলে অনেক সময় অপচয় হবে সুতরাং আপনি শুধু মূল বিষয়বস্তু খাতায় লিখে প্র্যাকটিস করবেন। এতে করে আপনার ব্রেইন বিষয়টি মাথায় সেভ করার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাবে এবং দীর্ঘদিন বিষয়টি আপনার মনে থাকবে।
৯. খেলাধুলা ও বিনোদন
পড়াশোনার একঘেয়েমি কাটাতে ও পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়াতে খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই। এতে আপনার শারীরিক পরিশ্রম হবে এবং মন মাইন্ড ও শরীর সুস্থ থাকবে। যা আপনাকে পড়াশোনায় মনোযোগী হতে সহায়তা করবে।
১০. রেগুলার ক্লাস করতে হবে
পড়া মনে রাখার উপায় গুলোর মধ্যে একটি হলো রেগুলার ক্লাসে উপস্থিত থাকা। সাধারণত একটা জিনিস নিজে পড়ার থেকে অন্য কেউ বললে তা বেশি মনে থাকে। তাই নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থাকা এবং শিক্ষকদের লেকচার ফলো করা যা আপনাকে পড়া দীর্ঘদিন মনে রাখতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করবে।
১১. বাস্তব জীবনে প্রয়োগ অথবা নাটকীয় ভঙ্গিতে পড়তে হবে
আপনি সবসময় আপনার পড়াশোনার বিষয়বস্তু গুলোকে বাস্তব কল্পনার সাথে তুলনা করবেন। এবং নাটকীয় ভঙ্গিতে পড়বেন। এতে করে আপনার পড়াগুলো দীর্ঘদিন মনে থাকবে এবং এটি হতে পারে আপনার জন্য পড়া মনে রাখার বেস্ট একটি উপায়।
১২. রাতে শোবার আগে পড়াশোনার বিষয় বস্তু ভাবতে হবে
আপনি প্রতিদিন কতটুকু পড়াশোনা করলেন দিন শেষে রাতে ঘুমানোর আগে তা অবশ্যই আপনাকে ভাবতে হবে। সে ক্ষেত্রে আপনি শুয়ে শুয়ে সারাদিনের পড়াশুনার বিষয় বস্তুগুলো একটু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে ভাবতে পারেন। এতে করে সারাদিনের পড়া আপনি সহজেই আয়ত্ত করতে পারবেন।
১৩. পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম
মানবদেহের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম কতটুকু প্রয়োজন তা আমরা সবাই কম বেশি সবাই জানি। একটি সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের জন্য দৈনিক সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানোর প্রয়োজন। সুতরাং মাইন্ড ফ্রেশ রাখতে এবং সুস্থ থাকতে আপনাকে দৈনিক 6 থেকে 7 ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। তবেই আপনি সুস্থ থাকবেন এবং পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারবেন।
পড়া মনে রাখার, বেস্ট ১৩ টি উপায় আপনাদের সামনে উপস্থাপন করলাম। উপরোক্ত বিষয়গুলো ফলো করলে আপনি সহজেই আপনার পড়া দীর্ঘদিন মনে রাখতে পারবেন। ধন্যবাদ।

great tips bro
উত্তরমুছুন